ইসলাম ডেস্ক : প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্মৃতি বিজড়িত ও শ্রেষ্ঠ মুজিজা সংঘটিত হওয়ার রাত আজ। এ রাতেই আল্লাহর দিদারে গিয়েছিলেন তিনি। এ রাতই হলো লাইলাতুল মেরাজ। যা শবে মেরাজ নামে সমধিক পরিচিত। চাঁদের হিসেব মতে এবার ১৪ এপ্রিল দিবাগত রাতই হলো শবে মেরাজ বা লাইলাতুল মেরাজ।
পাশাপাশি বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন আজ। বাংলা নববর্ষ উদযাপনে যেন পবি শবে মেরাজের অবমাননা না হয় সে বিষয়টির প্রতি লক্ষ্য রাখা বাঙ্গালী মুসলমানদের ঈমানের একান্ত দাবি।
ফারসি ‘শব’ এর অর্থ- রাত্র বা অন্ধকার এবং আরবি ‘মেরাজ’ এর অর্থ- ঊর্ধ্বগমন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২৬ রজব দিবাগত রাতে পবিত্র নগরী মক্কা থেকে ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘তিনি পবিত্র যিনি তার বান্দাকে (রাসুলকে) এক রাতে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন। তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য যার (মসজিদে আকসার) চারপাশকে আমি বরকতময় করেছিলাম। তিনি সবকিছু শোনেন এবং দেখেন। (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ১)
লাইলাতুল মেরাজ প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শ্রেষ্ঠ মুজিজা। এ রাতেই আল্লাহ তাআলা ইসলামের প্রধান ইবাদত নামাজকে শ্রেষ্ঠ উপহার হিসেবে দান করেছেন। এ কারণেই একনিষ্ঠতার সঙ্গে নামাজ আদায়কে মুমিনের মেরাজ বলা হয়। এ নামাজের মাধ্যমেই বান্দার সঙ্গে আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্য তৈরি হয়।
পবিত্র লাইলাতুল মেরাজ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। সে সঙ্গে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়।
পবিত্র লাইলাতুল মেরাজ প্রতি বছরই মানুষকে প্রিয়নবির জীবনের সেরা ঘটনা ও মুজিজার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। নামাজ মুমিনের মেরাজ স্বরূপ সেকথাও স্মরণ করিয়ে দেয়।
লাইলাতুল মেরাজ ঈমানদার মুমিন মুসলমানের জন্য আল্লাহর নৈকট্য লাভের সেরা অনুপ্রেরণা। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে আল্লাহ তাআলার একান্ত সাক্ষাতের শিক্ষা মানুষকে নামাজের প্রতি আগ্রহী করে তোলো।
মানুষ এ পবিত্র রাতের নামাজ, জিকির-আজকার, কুরআন তেলাওয়াতসহ যাবতীয় ইবাদত-বন্দেগীতে রাত অতিবাহিত করে। মাওলার নৈকট্য লাভে নিজেকে নিয়োজিত রাখে।
এ রাতের বিশেষ কোনো ইবাদত বা এ রাতকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোনো রোজার সুস্পষ্ট বর্ণনা না থাকলেও আল্লাহর নৈকট্য লাভে মুমিন মুসলমান মেরাজকে উপলক্ষ করে দিনের বেলায় রোজা পালন এবং রাতে ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে অতিবাহিত করে।
তাছাড়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো রজব মাসের শুরু থেকেই আল্লাহর কাছে বরকতের দোয়া করতেন এবং রমজান পর্যন্ত জীবন লাভে সবসময় ধরণা ধরতেন। তাই রজব মাসে আল্লাহর কাছে বরকত ও কল্যাণের দায়া করাও প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ এবং সুন্নাত।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র মেরাজকে কেন্দ্র করে একনিষ্ঠ নামাজি হিসেবে কবুল করুন। মুমিনের প্রতি ওয়াক্ত নামাজকে মেরাজ হিসেবে গণ্য করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-